জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন আবাসিক হলের ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার বিকেল ৫টায় জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট ও প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা নির্মাণাধীন হলের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন।
পরে বিকাল ৬টার দিকে ‘জাবির সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হল সংলগ্ন ২২ নম্বর নির্মাণাধীন হলের ছয় তলা থেকে পড়ে ২৫ বছর বয়সী শাহের আলী নামে এক শ্রমিক নিহত হন। তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়।
মানববন্ধনে শ্রমিক নিহতের ঘটনাকে খুন হিসেবে অভিহিত করেন শিক্ষার্থীরা। তারা কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে বাধ্য করার অভিযোগও তোলেন।
শ্রমিক নিহতের বিচারের দাবিতে নির্মাণাধীন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
মানববন্ধনে এই ঘটনায় তিন দফা দাবিও তোলা হয়। এর মধ্যে রয়েছে নিহত শ্রমিকের পরিবারকে তার আজীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেয়া, পরিবারের একজন কর্মক্ষম ব্যক্তির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি দেয়া।
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি দীপঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, 'গতকাল যে শ্রমিক নিহত হয়েছে তাকে আসলে হত্যা করা হয়েছে। শুরু থেকে নানা বিতর্ক, দুর্নীতি , অন্যায়ের মাধ্যমে চলছে এই নির্মাণ প্রকল্প।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শ্রমিকদের কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জামের ব্যবস্থা না করে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। যে শ্রমিককে মেরে ফেলা হলো তার দায়ভার নিতে হবে এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত না করা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে হবে।’
ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হক রনি বলেন, ‘ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টাকা লুটপাটে ব্যস্ত থাকায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার দিকে কোনো খেয়াল রাখছে না। শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে, এই হত্যার সঙ্গে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান, তদারকি কমিটি। এই শ্রমিক হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’